আজকে আমি আপনাদের সাথে অ্যাডসেন্স ও ব্লগস্পট নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো।আমদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা গুগলের ব্লগস্পট এ বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি শেয়ার করেন। এবং অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকামও করছেন। অনেকে যারা নতুন তারা ব্লগ করার চিন্তা ভাবনা করছেন এবং ব্লগে অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম করার উপায় খুজছেন। এই লেখাটি কিছুটা হলেও আপনাদের উপকারে আসবে বলে আশা রাখি। প্রথমেই একটা বিষয় বলে রাখি আমি নিজেও ব্লগস্পট ও অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম এর ব্যাপারে কিছু সফলতা পেয়েছি আর সেই অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি। কিছু প্রশ্ন ও উত্তরের সম্বন্বয়ে পোষ্টটি লিখছি......
1. ব্লগস্পট ও অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আসলে কি ইনকাম করা সম্ভব?
হ্যাঁ সম্ভব। আগেই বলেছি আমি পেরেছি আপনিও পারবেন। কিন্তু আপনাদের নিরাশ করে বলছি, যারা অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে রাতারাতি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করার চিন্তা করছেন তারা এখনি কেটে পড়ুন ,রাতরাতি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করার কোন পরামর্শ আমি দিতে আসিনি,আর আমার মনে হয় তা সম্ভব ও না। জানি না কেও (বাংলাদেশ এর প্রেক্ষাপটে বলছি) পেরেছে কি না!!! হাজার হাজার ডলার হয়তো ইনকাম করা সম্ভব না কিন্তু প্রতি ১ বা ২ মাসে 100 ডলার ইনকাম করা অবশ্যই সম্ভব। (আপনারা হয়তো জানেন অ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট এ মিনমাম ১০০ ডলার জমা হলেই গুগল পেমেন্ট পাঠিয়ে দেয়)। তাতে অন্তত আপনার নেট এর বিল আর হাত খরচের টাকাট চলে আসবে,তাই নয় কি?
2. তাহলে কি ভাবে কি দিয়ে শুরু করবো?
প্রথমেই আপনার দরকার ব্লগস্পট এ একটি ব্লগ। শুধু ব্লগস্পট এর কথা বলছি কারন আমি এটা দিয়েই ইনকাম করতে পেরেছি আর আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়া করছি মাত্র। যাই হোক আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয় বা সে সকল বিষয় নির্বাচন করে একটি ব্লগ ওপেন করুন। আপনি যদি নিজে লিখতে নাও পারেন তাহলে আপনার পছন্দের বিষেয়ে ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন কনটেন্ট সংগ্রহ করে তা সাজিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন। আমি কপি পেষ্ট কে অবশ্যই উৎসাহিত করছি না কিন্তু এমন কিছু বিষয়ও আছে যা বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে সংগ্রহ করে নিজের মত করে সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রেও যে বিষয়ে আপনার ভালো জ্ঞান আছে সে বিষয়টি নির্বাচন করুন। ব্লগস্পটে কিভাবে ব্লগ খুলতে হয় ও ব্লগ ডিজাইন করতে হয় সে বিষয়ে টেকটিউন্সে আগেও অনেক টিউন হয়েছে তাই আমি আর সেদিকে গেলাম না। প্রয়োজন হলে সেগুলো নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করে দেখে নিবেন।
ব্লগ খোলার প্রথম ২ থেকে ৩ মাস আপনাকে একটু বেশি সময় দিতে হবে ও সামান্য পরিশ্রম করতে হবে। প্রথম কয়েক মাস প্রচুর পরিমানে তথ্যবহুল ও কোয়ালিটি সম্পন্ন ভালো পোষ্ট দিতে থাকুন। পরে ধীরে ধীরে কোয়ালিটি বজায় রেখে পোষ্ট এর সংখ্যা কমিয়ে দিলেও সমস্যা হবে না আশা করি। মনে রাখবেন "Content Is The King". হবহু কপি পেস্ট করলে আপনার কনটেন্ট তেমন কোন কাজে আসবে না। উদাহরণ স্বরুপ আমার ব্লগ অ্যাড্রেসটি দিব এই পোষ্ট এর শেষে। যেটি দেখলে আপনাদের অনেক কিছুই হয়তো আরো কিছুটা পরিস্কার হয়ে আসবে।আমার ব্লগ এর বয়স ৬-৭ মাস হবে। ইতিমধ্যে দৈনিক 600+ ভিজিটর ও 1500 - 2500+ পেজ ভিউ পাওয়া যাচ্ছে, মাসে পেজ ভিউ ৫৫,000 + । মাত্র অল্প সময়ে আমি পারছি, কিভাবে আপনি পারবেন তা ধাপে ধাপে বলছি।
3. কখন ও কিভাবে অ্যাডসেন্স পাবো ও কিভাবে তা এপ্লাই করবো?
ব্লগ শুরু করার সাথে সাথেই অ্যাডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবেন না। কিছুদিন সময় নিন। ১ বা 2 মাস পর এটি করুন। কিভাবে অ্যাডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবেন ও তা এ্যাপ্রুভ করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত টিউন টেকটিউন্সে করা আছে। আমি প্রায় সব কিছুই এখান থেকে শিখেছি। একটু ঘাটা ঘাটি করুন আপনার জানার পরিধি অবশ্যই বাড়তে বাধ্য।
শুধু ব্লগ আর অ্যাডসেন্স নিয়ে বসে থাকলেই কিন্তু চলবে না। ব্লগে পর্যাপ্ত ভিজিটরও আসতে হবে। কিভাবে পর্যাপ্ত ভিজিটর পাবেন সে বিষয়ে পরের পয়েন্টে আলোচনা করবো।
অ্যাডসেন্স বিষয়ক সর্তকতা:
* কখনও নিজেই নিজের এ্যাড এ ক্লিক করবেন না।
*প্রক্সি ব্যবহার করে এ্যাড এ ক্লিক করবেন না।
*আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টে অস্বাভাবিক কিছু বা Invalid click ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে গুগল কে রিপোর্ট করুন। আপনার একাউন্ট রক্ষা্ পাবে।
*আপনার ব্লগের এ্যাড এ ক্লিক করতে কাওকে আমন্ত্রন জানাবেন না। মনে রাখবেন, গুগল আপনার বা আমার থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান। কোন চালাকি করতে গেলে আপনরা মূল্যবান অ্যাডসেন্স একাউন্টটি বাতিল হতে পারে।
4. কোথা থেকে ভিজিটর আসবে? কিভাবে ভিজিটর ধরে রাখা যাবে?
প্রথম কথা হলো আমার ব্লগের বেশিরভাগ ভিজিটর ই আসে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন থেকে ,তার মধ্যে সব থেকে বেশি আসে গুগল থেকে। ভিজিটর না থাকলে আপনার সকল পরিশ্রম বৃথা যাবে। কিভাবে আপনিও পারবেন?
Submit Your Sit to Search Engines:
আপনার সাইটি সব ধরনের সার্চ ইঞ্জিন এ সাবমিট করুন। কিভাবে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন এ আপনার সাইটি সাবমিট করবেন সে বিষয়ে গুগলে একটু ঘাটাঘাটি করলেই বিস্তারিত পেয়ে যাবেন আশা করি।
Comment on Various Blogs and Site To Create Back Link:
অন্যান্য ব্লগ ও সাইটে নিয়মিত কমেন্ট করুন ও আপনার সাইটের লিংক দিন। বিভিন্ন সাইটে আটিকেল লেখালেখি করুন। এটি আপনার সাইটের ব্যাক লিংক তৈরিতে সাহা্য্য করবে।যত বেশি ব্যাক লিংক তৈরি করবেন ততই আপনার পেজটি সার্চ ইঞ্জিন এ শো করতে সহায়তা করবে। এবং এ সকল ব্যাক লিংক থেকে আপনি নিয়মিত ভিজিটর ও পাবেন।
Do Not Create Back-link By One Click Back-link Submission Sites:
দেখা যায় যে অনেকে দ্রুত ব্যাক লিংক তৈরি করতে যেয়ে কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করতে যায়। এ বিষয়ে আমি কিছু টিউন টেকটিউন্সেও পেয়েছি। যেমন "Create Back-link Over 2500 Sites by One Click" পরামর্শ বা সর্তকতা যাই বলেন না কেন,ভুলেও এ সকল সাইটে আপনার লিংক সাবমিট করবেন না। সাময়িক ভাবে উপকৃত হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর ফল খুবই খারাপ। সার্চ ইঞ্জিন গুলো আপনার সাইটটি ব্লাক লিস্টেড করে দিতে পারে।
Use of Social Sites:
সোস্যাল সাইট গুলোতে আপনার সাইট এর ফ্যান পেজ বানাতে হবে। এবং আপনার সাইট এবং ফ্যান পেজ লিংক আপ করে দিতে হবে, যেন আপনি নতুন পোষ্ট করা মাত্র তা আপনার ফ্যান পেজ এ চলে আসে। কারন সকলেই নিয়মিত সোস্যাল সাইট গুলো ভিজিট করে থাকে। আপনি আপনার সাইটে নতুন কি দিলেন তা তারা সেখান থাকে জানতে পারবে। এবং আপনার সাইটে এটি ভিজিটির বাড়াতে সাহায্য করবে। সোস্যাল সাইট গুলোর মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকড ইন এ সহ আরো অনেক কিছুই ব্যবহার করতে পারেন। এবং লিংক আপ করার জন্য আমি ডেলিভার ইট এই সাইটটি ব্যবহার করি। ব্লগে নতুন পোষ্ট আসার সাথে সাথে তা অটোমেটিকালি ফ্যানপেজ গুলোতে পোষ্ট দিয়ে দেয়।
Create Interlink Inside your Post to Hold Visitor For Long Time:
আপনার প্রতিটি পোষ্টে ইন্টারলিংকিং রাখবেন। ইন্টারলিংকিং হলো--- ধরুন আপনি একটি পোস্ট তৈরি করছেন তার সাথে রিলেটেড পূর্বে প্রকাশিত কোন পোষ্ট এর লিংক যোগ করে দিন।
এটি আপনার সাইটে ভিজিটর দীর্ঘক্ষন ধরে রাখতে সহায়তা করবে। যার ফলে আপনার বাউন্স রেট কমবে। যা আপনার সার্চ ভিজিবিলিটি এর ক্ষেত্রে অনেক উপকার করবে।
Google Webmaster Tools:
বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সাইট সাবমিট করার কথা আগেই বলেছি কিন্তু শুধু সাবমিট করে বসে থাকলে চলবে না, আপনার পেজটি গুরুত্বপূর্ণ্ মনে না হলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইট টি ক্রল করতে অনেক দেরি করতে পারে। সেজন্য সাইট ম্যাপ সাবমিটও করতে হবে। যেহুতু আমার বেশিরভাগ ভিজিটর আসে গুগল থেকে তাই আমি দেখাবো কিভাবে এখানে সাইট ম্যাপ সাবমিট করতে হবে। আপনাকে একই ভাবে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনেও তা সাবমিট করতে হবে। গুগলে সাইট ম্যাপ সাবমিট করতে হলে আপনাকে Google Webmaster Tools টি ব্যবহার করতে হবে। এখানে Dashboard > Crawl >Sitemap এ যেয়ে আপনার সাইট ম্যাপটি সাবমিট করতে হবে। যদি আপনার সাইটে পোষ্ট এর সংখ্যা 0 -500 এর মধ্যে হয় তাহলে নিম্নো্ক্ত কোডটি ব্যবহার করুন-
যদি আপনার সাইটে পোষ্ট এর সংখ্যা 500 -1000 এর মধ্যে হয় তাহলে নিম্নো্ক্ত কোডটি ব্যবহার করুন-
/atom.xml?redirect=false&start-index=501&max-results=500
আর একটি সাইট ম্যাপ আছে পোষ্ট এর সংখ্যা যাই হোক না কেন আপনি ব্যবহার করতে পারেন- /sitemap.xml
আপনি কোন দেশ খেকে ভিজিটর টার্গেট করেন সে দেশটি ও সিলেক্ট করে দিতে হবে। যা Dashboard > Search Traffic>International Targeting এখানে পাবেন।
আমি ব্লগে এগুলো ব্যবহার করেছি, অন্যান্য সাইটে এটি একই রকম কিনা সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।
Bounce Rate:
এ বিষয়ে উপরে আগে আরেকবার বলেছি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন একজন ভিজিটর আপনার পেজ এ ল্যান্ড করলো কিন্তু সাথে সাথে বা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চলে গেল (সাধারনত 45 সেকেন্ডের আগে) তাহলে আপনার বাউন্স রেট বেড়ে যাবে। কেন আপনার সাইটের বাউন্সরেট বেড়ে যাচ্ছে, আর সবার থেকে আপনি নিজেই তা ভালো জানেন। তাই কারন টি বের করুন ও ভিজিটর ধরে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করুন। সুফল ও কুফল উপরে একবার বলে ফেলেছি।
Use Google Analytics:
Google Analytics এর ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ভিজিটর ট্রাক করুন। কোথা থেকে ভিজিটর আসছে, কি পড়ছে, কতক্ষন কোন পেজ এ থাকছে। ভিজিটর এর বয়স সীমা , Gender, সহ সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। যা থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
Alexa Ranking:
Alexa Ranking ব্যবহার করুন। কিভাবে আপনার সাইট এর Ranking কামবেন তা ভাবুন । অবশ্যই প্রচুর ভিজিটর এর মাধ্যমে। এ ছাড়াও কিছু সাধারন বিষয় আছে যা ব্যবহার করলে আপনার র্যান্কিং কমবে। এ বিষয়ে টেকটিউন্সে পোষ্ট আছে , যা ব্যবহার করে আমি সুফল পেয়েছে। গত 2 মাস আগেও আমার Blog এর Global Ranking ছিল 29,00,000 (+), বর্তমানে (আজকে) তা কমে দাড়িয়েছে 8,60,053 তে। একদিনে হয়নি অবশ্যই, ধীরে ধীরে হয়েছে এবং এখনো অব্যাহত আছে। আশাকরি আগমী 2/3 মাসের মধ্যে এটাকে 1 থেকে 2 লাখ এর মধ্যে রাখতে পারবো।
Target Your Visitor But Not Google:
সর্বপরি এবং সবশেষে একটা ছোট্ট কথা বলে শেষ করবো। গুগল বা অ্যাডসেন্স কে নয়, আপনার ভিজিটর কে টার্গেট করুন।
আমার ব্লগ ঠিকানা টা দিচ্ছি উপরের বিষয়গুলি পড়ে মিলিয়ে দেখলে কিছুটা ধারনা হবে হয়তো আপনার, যা নতুনদের উপকারে আসবে। আমার ব্লগ এখানে
আমি বলছি না বা দাবি করছি না এটি একটি আদর্শ ব্লগ, যেহুতু আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে এসেছি তাই নিজের উদাহরণটিই উপস্থাপন করলাম। ভূল হলে ক্ষমা করবেন। কোন বিষয়ে বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করুন। অথবা ফেসবুকে আমার পেজ এ আমাকে নক করতে পারেন। আমার ফেসবুক পেজ
বিষয়গুলো আলাদা আলাদা ভাবে অনেক ব্যাপক। যা একসাখে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে পোষ্ট অতিদীর্ঘ হয়ে যেত। তাই আমি মোটামুটি কিছু বিষয়ে ধারনা দেবার চেষ্টা করলাম। আপনাদের কিছুটা উপকারে আসলেও আমার সার্থকতা। সময় ও সুযোগ বুঝে এ সকল বিষয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। সেই আশা নিয়ে আজ বিদায় নিচ্ছি। দোআ করবেন। ভালো থাকবেন।
খোদা হাফেজ।
1. ব্লগস্পট ও অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আসলে কি ইনকাম করা সম্ভব?
হ্যাঁ সম্ভব। আগেই বলেছি আমি পেরেছি আপনিও পারবেন। কিন্তু আপনাদের নিরাশ করে বলছি, যারা অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে রাতারাতি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করার চিন্তা করছেন তারা এখনি কেটে পড়ুন ,রাতরাতি হাজার হাজার ডলার ইনকাম করার কোন পরামর্শ আমি দিতে আসিনি,আর আমার মনে হয় তা সম্ভব ও না। জানি না কেও (বাংলাদেশ এর প্রেক্ষাপটে বলছি) পেরেছে কি না!!! হাজার হাজার ডলার হয়তো ইনকাম করা সম্ভব না কিন্তু প্রতি ১ বা ২ মাসে 100 ডলার ইনকাম করা অবশ্যই সম্ভব। (আপনারা হয়তো জানেন অ্যাডসেন্স এ্যাকাউন্ট এ মিনমাম ১০০ ডলার জমা হলেই গুগল পেমেন্ট পাঠিয়ে দেয়)। তাতে অন্তত আপনার নেট এর বিল আর হাত খরচের টাকাট চলে আসবে,তাই নয় কি?
2. তাহলে কি ভাবে কি দিয়ে শুরু করবো?
প্রথমেই আপনার দরকার ব্লগস্পট এ একটি ব্লগ। শুধু ব্লগস্পট এর কথা বলছি কারন আমি এটা দিয়েই ইনকাম করতে পেরেছি আর আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়া করছি মাত্র। যাই হোক আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয় বা সে সকল বিষয় নির্বাচন করে একটি ব্লগ ওপেন করুন। আপনি যদি নিজে লিখতে নাও পারেন তাহলে আপনার পছন্দের বিষেয়ে ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন কনটেন্ট সংগ্রহ করে তা সাজিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন। আমি কপি পেষ্ট কে অবশ্যই উৎসাহিত করছি না কিন্তু এমন কিছু বিষয়ও আছে যা বিভিন্ন ওয়েব সাইট থেকে সংগ্রহ করে নিজের মত করে সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রেও যে বিষয়ে আপনার ভালো জ্ঞান আছে সে বিষয়টি নির্বাচন করুন। ব্লগস্পটে কিভাবে ব্লগ খুলতে হয় ও ব্লগ ডিজাইন করতে হয় সে বিষয়ে টেকটিউন্সে আগেও অনেক টিউন হয়েছে তাই আমি আর সেদিকে গেলাম না। প্রয়োজন হলে সেগুলো নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করে দেখে নিবেন।
ব্লগ খোলার প্রথম ২ থেকে ৩ মাস আপনাকে একটু বেশি সময় দিতে হবে ও সামান্য পরিশ্রম করতে হবে। প্রথম কয়েক মাস প্রচুর পরিমানে তথ্যবহুল ও কোয়ালিটি সম্পন্ন ভালো পোষ্ট দিতে থাকুন। পরে ধীরে ধীরে কোয়ালিটি বজায় রেখে পোষ্ট এর সংখ্যা কমিয়ে দিলেও সমস্যা হবে না আশা করি। মনে রাখবেন "Content Is The King". হবহু কপি পেস্ট করলে আপনার কনটেন্ট তেমন কোন কাজে আসবে না। উদাহরণ স্বরুপ আমার ব্লগ অ্যাড্রেসটি দিব এই পোষ্ট এর শেষে। যেটি দেখলে আপনাদের অনেক কিছুই হয়তো আরো কিছুটা পরিস্কার হয়ে আসবে।আমার ব্লগ এর বয়স ৬-৭ মাস হবে। ইতিমধ্যে দৈনিক 600+ ভিজিটর ও 1500 - 2500+ পেজ ভিউ পাওয়া যাচ্ছে, মাসে পেজ ভিউ ৫৫,000 + । মাত্র অল্প সময়ে আমি পারছি, কিভাবে আপনি পারবেন তা ধাপে ধাপে বলছি।
3. কখন ও কিভাবে অ্যাডসেন্স পাবো ও কিভাবে তা এপ্লাই করবো?
ব্লগ শুরু করার সাথে সাথেই অ্যাডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবেন না। কিছুদিন সময় নিন। ১ বা 2 মাস পর এটি করুন। কিভাবে অ্যাডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবেন ও তা এ্যাপ্রুভ করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত টিউন টেকটিউন্সে করা আছে। আমি প্রায় সব কিছুই এখান থেকে শিখেছি। একটু ঘাটা ঘাটি করুন আপনার জানার পরিধি অবশ্যই বাড়তে বাধ্য।
শুধু ব্লগ আর অ্যাডসেন্স নিয়ে বসে থাকলেই কিন্তু চলবে না। ব্লগে পর্যাপ্ত ভিজিটরও আসতে হবে। কিভাবে পর্যাপ্ত ভিজিটর পাবেন সে বিষয়ে পরের পয়েন্টে আলোচনা করবো।
অ্যাডসেন্স বিষয়ক সর্তকতা:
* কখনও নিজেই নিজের এ্যাড এ ক্লিক করবেন না।
*প্রক্সি ব্যবহার করে এ্যাড এ ক্লিক করবেন না।
*আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টে অস্বাভাবিক কিছু বা Invalid click ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে গুগল কে রিপোর্ট করুন। আপনার একাউন্ট রক্ষা্ পাবে।
*আপনার ব্লগের এ্যাড এ ক্লিক করতে কাওকে আমন্ত্রন জানাবেন না। মনে রাখবেন, গুগল আপনার বা আমার থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান। কোন চালাকি করতে গেলে আপনরা মূল্যবান অ্যাডসেন্স একাউন্টটি বাতিল হতে পারে।
4. কোথা থেকে ভিজিটর আসবে? কিভাবে ভিজিটর ধরে রাখা যাবে?
প্রথম কথা হলো আমার ব্লগের বেশিরভাগ ভিজিটর ই আসে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন থেকে ,তার মধ্যে সব থেকে বেশি আসে গুগল থেকে। ভিজিটর না থাকলে আপনার সকল পরিশ্রম বৃথা যাবে। কিভাবে আপনিও পারবেন?
Submit Your Sit to Search Engines:
আপনার সাইটি সব ধরনের সার্চ ইঞ্জিন এ সাবমিট করুন। কিভাবে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন এ আপনার সাইটি সাবমিট করবেন সে বিষয়ে গুগলে একটু ঘাটাঘাটি করলেই বিস্তারিত পেয়ে যাবেন আশা করি।
Comment on Various Blogs and Site To Create Back Link:
অন্যান্য ব্লগ ও সাইটে নিয়মিত কমেন্ট করুন ও আপনার সাইটের লিংক দিন। বিভিন্ন সাইটে আটিকেল লেখালেখি করুন। এটি আপনার সাইটের ব্যাক লিংক তৈরিতে সাহা্য্য করবে।যত বেশি ব্যাক লিংক তৈরি করবেন ততই আপনার পেজটি সার্চ ইঞ্জিন এ শো করতে সহায়তা করবে। এবং এ সকল ব্যাক লিংক থেকে আপনি নিয়মিত ভিজিটর ও পাবেন।
Do Not Create Back-link By One Click Back-link Submission Sites:
দেখা যায় যে অনেকে দ্রুত ব্যাক লিংক তৈরি করতে যেয়ে কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করতে যায়। এ বিষয়ে আমি কিছু টিউন টেকটিউন্সেও পেয়েছি। যেমন "Create Back-link Over 2500 Sites by One Click" পরামর্শ বা সর্তকতা যাই বলেন না কেন,ভুলেও এ সকল সাইটে আপনার লিংক সাবমিট করবেন না। সাময়িক ভাবে উপকৃত হলেও দীর্ঘমেয়াদে এর ফল খুবই খারাপ। সার্চ ইঞ্জিন গুলো আপনার সাইটটি ব্লাক লিস্টেড করে দিতে পারে।
Use of Social Sites:
সোস্যাল সাইট গুলোতে আপনার সাইট এর ফ্যান পেজ বানাতে হবে। এবং আপনার সাইট এবং ফ্যান পেজ লিংক আপ করে দিতে হবে, যেন আপনি নতুন পোষ্ট করা মাত্র তা আপনার ফ্যান পেজ এ চলে আসে। কারন সকলেই নিয়মিত সোস্যাল সাইট গুলো ভিজিট করে থাকে। আপনি আপনার সাইটে নতুন কি দিলেন তা তারা সেখান থাকে জানতে পারবে। এবং আপনার সাইটে এটি ভিজিটির বাড়াতে সাহায্য করবে। সোস্যাল সাইট গুলোর মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকড ইন এ সহ আরো অনেক কিছুই ব্যবহার করতে পারেন। এবং লিংক আপ করার জন্য আমি ডেলিভার ইট এই সাইটটি ব্যবহার করি। ব্লগে নতুন পোষ্ট আসার সাথে সাথে তা অটোমেটিকালি ফ্যানপেজ গুলোতে পোষ্ট দিয়ে দেয়।
Create Interlink Inside your Post to Hold Visitor For Long Time:
আপনার প্রতিটি পোষ্টে ইন্টারলিংকিং রাখবেন। ইন্টারলিংকিং হলো--- ধরুন আপনি একটি পোস্ট তৈরি করছেন তার সাথে রিলেটেড পূর্বে প্রকাশিত কোন পোষ্ট এর লিংক যোগ করে দিন।
এটি আপনার সাইটে ভিজিটর দীর্ঘক্ষন ধরে রাখতে সহায়তা করবে। যার ফলে আপনার বাউন্স রেট কমবে। যা আপনার সার্চ ভিজিবিলিটি এর ক্ষেত্রে অনেক উপকার করবে।
Google Webmaster Tools:
বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সাইট সাবমিট করার কথা আগেই বলেছি কিন্তু শুধু সাবমিট করে বসে থাকলে চলবে না, আপনার পেজটি গুরুত্বপূর্ণ্ মনে না হলে সার্চ ইঞ্জিন আপনার সাইট টি ক্রল করতে অনেক দেরি করতে পারে। সেজন্য সাইট ম্যাপ সাবমিটও করতে হবে। যেহুতু আমার বেশিরভাগ ভিজিটর আসে গুগল থেকে তাই আমি দেখাবো কিভাবে এখানে সাইট ম্যাপ সাবমিট করতে হবে। আপনাকে একই ভাবে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনেও তা সাবমিট করতে হবে। গুগলে সাইট ম্যাপ সাবমিট করতে হলে আপনাকে Google Webmaster Tools টি ব্যবহার করতে হবে। এখানে Dashboard > Crawl >Sitemap এ যেয়ে আপনার সাইট ম্যাপটি সাবমিট করতে হবে। যদি আপনার সাইটে পোষ্ট এর সংখ্যা 0 -500 এর মধ্যে হয় তাহলে নিম্নো্ক্ত কোডটি ব্যবহার করুন-
/atom.xml?redirect=false&start-index=1&max-results=500 |
/atom.xml?redirect=false&start-index=501&max-results=500
আর একটি সাইট ম্যাপ আছে পোষ্ট এর সংখ্যা যাই হোক না কেন আপনি ব্যবহার করতে পারেন- /sitemap.xml
আপনি কোন দেশ খেকে ভিজিটর টার্গেট করেন সে দেশটি ও সিলেক্ট করে দিতে হবে। যা Dashboard > Search Traffic>International Targeting এখানে পাবেন।
আমি ব্লগে এগুলো ব্যবহার করেছি, অন্যান্য সাইটে এটি একই রকম কিনা সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।
Bounce Rate:
এ বিষয়ে উপরে আগে আরেকবার বলেছি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন একজন ভিজিটর আপনার পেজ এ ল্যান্ড করলো কিন্তু সাথে সাথে বা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চলে গেল (সাধারনত 45 সেকেন্ডের আগে) তাহলে আপনার বাউন্স রেট বেড়ে যাবে। কেন আপনার সাইটের বাউন্সরেট বেড়ে যাচ্ছে, আর সবার থেকে আপনি নিজেই তা ভালো জানেন। তাই কারন টি বের করুন ও ভিজিটর ধরে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করুন। সুফল ও কুফল উপরে একবার বলে ফেলেছি।
Use Google Analytics:
Google Analytics এর ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার ভিজিটর ট্রাক করুন। কোথা থেকে ভিজিটর আসছে, কি পড়ছে, কতক্ষন কোন পেজ এ থাকছে। ভিজিটর এর বয়স সীমা , Gender, সহ সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। যা থেকে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
Alexa Ranking:
Alexa Ranking ব্যবহার করুন। কিভাবে আপনার সাইট এর Ranking কামবেন তা ভাবুন । অবশ্যই প্রচুর ভিজিটর এর মাধ্যমে। এ ছাড়াও কিছু সাধারন বিষয় আছে যা ব্যবহার করলে আপনার র্যান্কিং কমবে। এ বিষয়ে টেকটিউন্সে পোষ্ট আছে , যা ব্যবহার করে আমি সুফল পেয়েছে। গত 2 মাস আগেও আমার Blog এর Global Ranking ছিল 29,00,000 (+), বর্তমানে (আজকে) তা কমে দাড়িয়েছে 8,60,053 তে। একদিনে হয়নি অবশ্যই, ধীরে ধীরে হয়েছে এবং এখনো অব্যাহত আছে। আশাকরি আগমী 2/3 মাসের মধ্যে এটাকে 1 থেকে 2 লাখ এর মধ্যে রাখতে পারবো।
Target Your Visitor But Not Google:
সর্বপরি এবং সবশেষে একটা ছোট্ট কথা বলে শেষ করবো। গুগল বা অ্যাডসেন্স কে নয়, আপনার ভিজিটর কে টার্গেট করুন।
আমার ব্লগ ঠিকানা টা দিচ্ছি উপরের বিষয়গুলি পড়ে মিলিয়ে দেখলে কিছুটা ধারনা হবে হয়তো আপনার, যা নতুনদের উপকারে আসবে। আমার ব্লগ এখানে
আমি বলছি না বা দাবি করছি না এটি একটি আদর্শ ব্লগ, যেহুতু আমি আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে এসেছি তাই নিজের উদাহরণটিই উপস্থাপন করলাম। ভূল হলে ক্ষমা করবেন। কোন বিষয়ে বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করুন। অথবা ফেসবুকে আমার পেজ এ আমাকে নক করতে পারেন। আমার ফেসবুক পেজ
বিষয়গুলো আলাদা আলাদা ভাবে অনেক ব্যাপক। যা একসাখে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেলে পোষ্ট অতিদীর্ঘ হয়ে যেত। তাই আমি মোটামুটি কিছু বিষয়ে ধারনা দেবার চেষ্টা করলাম। আপনাদের কিছুটা উপকারে আসলেও আমার সার্থকতা। সময় ও সুযোগ বুঝে এ সকল বিষয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করার ইচ্ছা আছে। সেই আশা নিয়ে আজ বিদায় নিচ্ছি। দোআ করবেন। ভালো থাকবেন।
খোদা হাফেজ।
No comments:
Post a Comment