Thursday, October 4, 2012

রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস পুঁঠীয়া রাজবাড়ী..........

প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস

পুঁঠীয়া রাজবাড়ী....

রাজশাহী শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্বে ৬০একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই পুঁঠীয়া রাজবাড়ী। সম্রাট আকবরের শাসনামলে এই রাজ বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনুমান করা হয় এই রাজ বংশ ১৫৯০ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ বছর স্থায়ী ছিল। এই রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন পিতাম্বর। ১৫৩৮ থেকে ১৫৭৬সাল পর্যন্ত বাংলায় আফগান শাসন থাকায় এর বিভিন্ন অংশ আফগান জায়গিরদের অধীনে ছিল। লস্কর খান নামক একজন আফগান জাইগিরদারের নাম অনুসারে পুঁঠীয়ার পূর্বের নাম ছিল লস্করপুর। বর্ষাচার্জের বড় ছেলে পিতাম্বররের মাধ্যমে পুঁঠীয়ার জমিদারীর সূচনা হয়। এবং তিনি পুঁঠীয়া রাজবাড়ী নির্মাণ করেন। পুঁঠীয়ায় এই রাজবাড়ী বহিঃশত্রু আক্রমন থেকে রক্ষার জন্য রাজবাড়ীর চারপাশে ৩০ একর জলাশয় খনন করা হয়। ইতিমধ্যে এই রাজবাড়ীর অনেক প্রাচীন নিদর্শন ধংস হয়ে গেছে। তারপরেও এই আঙ্গিনার মধ্যে এখনও মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি রাজ প্রাসাদ। ৯টি মন্দির ও একটি মঠ এর মধ্যে রয়েছে, পঞ্চরত্ন ,গোবিন্দ মন্দির, রয়েছে পশ্চিম দিকে কুঁড়ে ঘর আকৃতির জগদাত্রির মন্দির, আহ্নিক মন্দির। রাজবাড়ীর প্রবেস পথে রয়েছে বিরাট শিব মন্দির। এছাড়াও দোল মন্দির সহ আরওকিছু মন্দির রয়েছে। রানী হেমন্ত কুমারী দেবী তার শাশুড়ি মহা রানী শরথ সুন্দরী দেবীর সম্মানার্থে ১৮৯৫সালে এই বিশাল প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। রাজশাহীতে একটি ঐতিহ্যবাহী কল রয়েছে যার নাম ঢোব, এটিও স্থাপন করেন রানী হেমন্ত কুমারী। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ১৯৭৫ ও ১৯৭৮ সালে পর্যায়ক্রমে কিছু মন্দির অধিগ্রহ করেন। সর্বশেষ তৃতীয় পর্যায়ে ১৯৮৭সালে পাচানা রাজত্তের মালিকানাধীন এই রাজ প্রাসাদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ অধিগ্রহ করেন। সুরম্য এই রাজবাড়ীটি ১৯৭৩সাল থেকে লস্করপুর মহাবিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুঁঠীয়া রাজবাড়ী এই এলাকার সবচাইতে উল্লেখযোগ্য প্রাচীন নিদর্শন।

প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য- পশ্চিম বঙ্গের সাবেক মুখ্য মন্ত্রি যতি বসু এই রাজশাহী কলেজেই পড়াশুনা করেন।

--বাংলাদেশের একমাত্র পুলিশ একাডেমী চারঘাট উপজেলার সারদাতে অবস্থিত।

--এই খানের নাটোরের কাঁচাগোল্লা দেশ জুড়ে বিখ্যাত।

--পুঁঠীয়া ১৮৬৯ সালে থানার মর্যাদা লাভ করেন।

--রাজশাহীর আর একটি পরিচয়ের মধ্যে হচ্ছে, রাজশাহী সিল্ক নগরী হিসেবেও বেশ পরিচিত।

No comments:

Post a Comment